হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী,
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আইয়ামে ফাতেমা যাহ্রা (সা.আ.) উপলক্ষ্যে সকল ইরানবাসীকে, হাওজায়ে ইলমিয়ের উলামাদেরকে এবং সমস্ত রুহানী এবং সকল জাগ্রত দ্বীন প্রচারকারীদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
বর্তমানে ইরান ও মুসলিম বিশ্বের তরুণ প্রজন্মরা মানবগঠনমূলক, ইসলামী জাগরণমূলক, নবীর শিক্ষা ও ইমামদের সীরাতের এবং নবী দুলালী হযরত ফাতিমা যাহ্রার আদর্শের প্রতি প্রয়োজনবোধ করছে। আর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি এবং আলেমদের উচিৎ, তরুণ সমাজের এই চেতনা ও জাগরণীমূলক চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণের ও তা বিস্তৃতকরণের লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা। আর এই চেষ্টা-প্রচেষ্টা ও সংগ্রামের ক্ষেত্রে জান্নাতের নেত্রী হযরত ফাতেমা যাহ্রার নাম প্রথমেই চলে আসে। তাদের কর্তব্য হলো ঐশী শিক্ষা ও পরিচিতি লাভের ক্ষেত্রে যেসব বাঁধা-বিপত্তি ও সংশয় রয়েছে, সেগুলো যেন আলেমরা সম্মিলিতভাবে সমধান করেন। ফাতেমা যাহরার আদর্শ ও তাঁর ঐশী দিক-নির্দেশনাকে গনীমত মনে করে মানুষের জীবন পরিচালনার জন্য তা থেকে উপকৃত হতে হবে। সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে, তারা যেন ইসলামী আদর্শ ও হযরত ফাতিমা যাহরার চির ভাস্বর আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করা এবং তা বিস্তৃতকরণের লক্ষ্যে সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় এবং সেজন্য “ধর্ম প্রচারের আন্দোলন ও ফাতেমী আদর্শ প্রচারের সংগ্রাম” নামক কর্মসূচী গ্রহণ করে।
বর্তমানের এই সংবেদনশীল ও সংকটময় পরিস্থিতিতে মুসলিম উম্মাহর প্রতিকুল অবস্থা, তাদের বিভিন্ন বিষয়াবলী, দুর্বল ও অসহায়দের প্রতি বিশেষত ফিলিস্তিনের গাযা ও লেবাননের যুদ্ধ বিধ্বস্ত ও নিপীড়িত মানুষের সাহায্যের বিষয়ের প্রতি সকলের বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করা এবং তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে।
আইয়ামে ফাতেমিয়া উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এই মজলিসে ফিলিস্তিনের দুর্বল ও অসহায় মানুষের আর্তনাদ, দখলদার ইহুদীবাদী শাসকের যুলুম-নির্যাতন ও নিপীড়ন, গণহত্যা, ইহুদীবাদী শাসকের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ এবং এসব অন্যায়, অত্যাচার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডের পিছনে আমেরিকা যে ধরনের ন্যাক্কারজনক ও নির্লজ্জ পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে, সে সম্পর্কে বিশ্ব মুসলিমকে সতর্ক ও অবগত করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পরিবার ও নারী সমাজের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টিপাত করা এবং এবং হযরত ফাতিমা যাহ্রার জীবনাদর্শের আলোকে আমাদের পরিবার ব্যবস্থা গঠন করা এবং নারী অধিকারকে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা উচিৎ। ফাতেমী সংস্কৃতিকে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেয়া এবং সেই আদর্শ মোতাবেক পরিবার ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হবে আইয়ামে ফাতেমিয়া পালনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
আয়াতুল্লাহ আরাফি আরো বলেছেন, আমাদের সকলের উচিৎ ফিলিস্তিন ও লেবাননের নিপীড়িত মানুষের সাহায্য ও সহযোগীতা করার জন্য সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা করা এবং অন্যদেরকে এই কাজের প্রতি উৎসাহিত করা। ইসলামী বিপ্লবের মহান রাহবার এই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছেন। আমরা যেন তাঁর উত্তম দিক-নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিরোধ সংগ্রামের পথে আন্দোলনকারীদের এবং যালেমদের যুলুমের শিকার নিরীহ মানুষের সাহায্যের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালায় যেন সমাজের মানুষ এই সাহায্য সহযোগীতার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে।
মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন বিশ্বের সব দাম্ভিক, অত্যাচারী ও যালিম শাসকদেরকে তাদের অপকর্মের মাধ্যমেই ধ্বংস করে দেন এবং নিপীড়িত ও অসহায় মানুষদেরকে ইহুদীবাদী ও দখলদার শাসকদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ যেন ইসলাম ও মুসলমানদেরকে বিজয় দান করেন এবং অহংকারী, দাম্ভিক ও অত্যাচারীদেরকে এই পৃথিবীর মাটি থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেন। যারা এই প্রতিরোধ সংগ্রামে জান প্রাণ দিয়ে লড়াই করে যাচ্ছে তাদের ঈমানী শক্তি যেন আরো বৃদ্ধি করে দেন।
আলী রেজা আরাফি (ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ার প্রধান)